ধানের টুংরো রোগ

 

av‡bi Uzs‡iv †ivM

ধানের টুংরো রোগ


Ø  ধান গাছের টুংরো রোগের নাম ।

Ø   টুংরো রোগের কারণ/জীবাণুর নাম ও ছবি।

Ø  রোগের ধরেণ( ছত্রাকজনিত ও মাটি বাহিতত রোগ)।

Ø   পোষকসমূহ।

Ø  রোগের লক্ষণ ও ছবি।

Ø  জীবাণুর অবস্থান।

Ø  জীবাণুর বিস্তার।

Ø  রোগের অনুকুল আবহাওয়া।

Ø  রোগচক্র।

Ø  দমন ব্যবস্থপনা(প্রতিরোধমুলক ও প্রতিকারমুলক) ভৌত দমন, পরিচর্যাগত দমন, জৈবিক দমন, রাসায়নিক দমন।

সুচনাdes

ধানের মূখ্য রোগসমূহের মধ্যে যেসব রোগ বেশি মাত্রায় ক্ষতি করে তার মধ্যে টুংরো রোগ অন্যতম। কুমিল্লা অঞ্চলে ধানের টুংরো রোগ প্রধানত আউশ, আমন বোরো মৌসুমে দেখা যায়। বাংলাদেশের মধ্যে কুমিল্লা অঞ্চল টুংরোপ্রবণ এলাকা হিসেবে পরিচিত। এটি একটি ভাইরাসজনিত রোগ। সবুজ পাতাফড়িং নেফোটেটিক্স ভাইরিসেনস (Nephotettix virescen ) নামক এক ধরনের পোকা রোগটির বাহক। কুশি অবস্থা থেকে থোড় আসা পর্যায় পর্যন্ত যে কোন সময় রোগটি দেখা দিতে পারে। রোগের আক্রমণে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। বীজতলায় ধানের চারা গাছ ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হলে, লাগানোর পর লক্ষণ প্রকাশ পেলে এবং রোগের মাত্রা বেশি হলে ক্ষেত্র বিশেষে ধানের ফলন ১০০% পর্যন্ত নষ্ট হতে পারে। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট, আঞ্চলিক কার্যালয়, কুমিল্লা হতে ধানের টুংরো রোগ দমন ব্যবস্থাপনা প্রযুক্তিটি উদ্ভাবন করা হয়। কুমিল্লা জেলার নাঙ্গলকোট, দেবিদ্বার লাকসাম উপজেলার বিভিন্ন ব্লকে কৃষকের ধানের বীজতলায় জমিতে আউশ, আমন বোরো ২০১৯-২০, ২০২০-২১ মৌসুমে টুংরো রোগ দমনের পরীক্ষা স্থাপন করে তা সফলভাবে সম্পন্ন করা হয়েছে। উক্ত পরীক্ষা হতে দেখা যায় যে, টুংরো রোগের মূল কারণগুলো হলো বীজতলায় প্রচুর পরিমাণে সবুজ পাতা ফড়িং-এর উপস্থিতি, বীজতলা হতে টুংরো রোগের উপস্থিতি, বার্ষিক গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি, কম বৃষ্টিপাত, টুংরো সংবেদনশীল ধানের জাত চাষাবাদ, বছরের তিন মৌসুমেই ধান চাষ ইত্যাদি। ধান গাছ একবার টুংরো ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হয়ে গেলে সেটা আর আরোগ্য হয় না।

টুংরো রোগের নাম :

ধানের টুংরো রোগ (Nephotettix virescen ) ভাইরাসজনিত রোগ।

টুংরো রোগের কারন/জীবানুর নাম ছবি

সবুজ পাতাফড়িং নামক এক ধরনের পোকা এই রোগটির বাহক। এই রোগে একই ক্ষেতের সব গাছ একই সঙ্গে আক্রান্ত না- হতে পারে। তবে রোগটি চারা অবস্থা থেকে ফুল আসা পর্যন্ত যেকোনো সময় দেখা দিতে পারে।



 

‡iv‡Mi aiY: 

টুংরো রোগ হলে ধান গাছের বাড়তি কমে যায় এবং কুশি কম হয়। আক্রান্ত পাতা পাতার খোল খাটো হয়। কচি পাতাগুলো পুরাতন পাতার খোলের মধ্যে আটকে থাকে। নুতন পাতা খাটো চওড়া হয় এবং মোচড় খেয়ে যায়। এসব কারণে গাছ বাড়তে পারে না। আক্রান্ত পাতা প্রথমে হালকা হলুদ এবং পরে গাঢ় হলুদ থেকে কমলা বর্ণের হয়ে যায়।

ধানের জাত বিশেষ পাতার রং ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। পাতা কান্ডের মধ্যবর্তী কোন বেড়ে যায়। আক্রান্ত ধান গাছ পাকা পর্যন্ত বাঁচতে পারে তবে আক্রমণ তীব্র হলে গাছগুলো শুকিয়ে মরার মত হয়ে যায়। হালকাভাবে আক্রান্ত গাছ বেঁচে থাকে তবে তাতে - সপ্তাহ পর ফুল আসে এবং ফলন অনেক কম হয়।

এসব গাছে ধানের ছড়া আংশিক বের হয়, দানাগুলো কালো অপুষ্ট হয়। দেরীতে আক্রান্ত গাছে ধান পাকা পর্যন্ত রোগের লক্ষণ অনেক ক্ষেত্রে ম্লান হয়ে যায়। টুংরো আক্রান্ত ধান গাছ কাটার পর তার মুড়ি ধানেও রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায়।

ধানের টুংরো রোগরে পোষক সমুহ

সবুজ পাতা ফড়িং নামের একটি পোকা এই ভাইরাসের বাহক। একটি পোকা টুংরো আক্রান্ত গাছ থেকে রস শোষণ করলে তার পাকস্থলীতে ভাইরাসটি গিয়ে অসংখ্য ভাইরাসের জন্ম হয়। পরে এই পোকা যেসব সুস্থ গাছের রস শোষণ করে - তাতেই ভাইরাসটি ছড়াতে থাকে।

ধানের টুংরো রোগরে লক্ষন ছবি

টুংরো রোগ একটি ভাইরাস জনিত রোগ। সবুজ পাতাফড়িং নামক এক ধরণের পোকা রোগটির বাহক। রোগটি চারা অবস্থা থেকে ফুল আসা পর্যন্ত যে কোন সময় দেখা দিতে পারে। প্রাথমিক অবস্থায় আক্রান্ত গাছের পাতায় লম্বালম্বিভাবে হালকা সবুজ হালকা হলদে রেখা দেখা দেয়। পরে আস্তে আস্তে পুরো পাতাটাই হলদে বা কমলা হলদে রং ধারণ করে। আক্রান্ত কচি পাতা হালকা রংয়ের হয় এবং মুচড়ে যায়।

প্রাথমিক অবস্থায় আক্রান্ত গাছের পাতায় লম্বালম্বিভাবে হালকা সবুজ হালকা হলদে রেখা দেখা দেয়। পরে আস্তে আস্তে পুরো পাতাই হলদে বা কমলা হলদে রং ধারণ করে। আক্রান্ত কচি পাতাগুলো পুরনো পাতার খোলের মধ্যে আটকে থাকে। ধীরে ধীরে কচি পাতা হালকা রঙের হয় এবং মুচড়ে যায়।

ধান গাছ প্রাথমিক পর্যায়ে বিক্ষিপ্তভাবে হলদে অথবা কমলা হলুদ রঙের হবে এবং সুস্থ্য গাছের তুলনায় গাছ খাট হয়ে যাবে। ধান গাছের নতুন শিকড় গজায় না শিকড় দুর্বল হয়ে পড়ে যার ফলে গাছ টান দিলে সহজে মাটি থেকে উঠে আসে। টুংরো আক্রান্ত গাছের পাতায় লম্বালম্বিভাবে হালকা সবুজ হালকা হলদে রেখা দেখা দেয়। পরে ধীরে ধীরে পুরো পাতাটাই হলদে থেকে কমলা হলদে রং ধারণ করে। আক্রান্ত কচি পাতা হালকা হলুদ রঙের হয় এবং মুচড়ে যায়। আক্রান্ত গাছ বেঁচে থাকলেও তাতে কিছুটা বিলম্বে ফুল আসে এবং এসব গাছে ধানের ছড়া আংশিক বের হয়, দানাগুলো কালো অপুষ্ট হয়। উক্ত গবেষণায় বীজতলায় ধানের চারা গাছ ভাইরাস দারা আক্রান্ত হলে মূল জমিতে লাগানোর পর প্রায় পুরো জমিতে লক্ষণ প্রকাশ পায় যদি প্রাথমিক অবস্থায় জমিতে বিক্ষিপ্তভাবে দু-একটি গাছে লক্ষণ দেখা যায় তবে ধরে নিতে হবে সবুজ পাতাফড়িং পোকা ধান লাগানোর পর আক্রমণ করেছে। কোনো ব্যবস্থাপনা না নিলে আক্রান্ত গাছের সংখ্যা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পেতে থাকবে। এখানে উল্লেখ্য যে, ইউরিয়া সার অর্থাৎ নাইট্রোজেন-এর অভাবে পুরো জমির ধান গাছের বয়স্ক পাতা এবং সালফারের অভাবে কচি পাতা সমভাবে হলুদ হয়ে যাবে কিন্তু টুংরোর ক্ষেত্রে বয়স্ক এবং কচি উভয় পাতাই হলুদ হয়ে যাবে।  



রোগের অনুকূল অবস্থা
সাধারণত আউশ, আমন বোরো তিন মৌসুমেই ধান চাষ করলে এবং রোগপ্রবণ জাত লাগালে টুংরো রোগের প্রকোপ খুব বেশি দেখা যায়। আশেপাশে রোগাক্রান্ত গাছ, বাওয়া ধান, মুড়ি ধান (রেটুন) বা ঘাসজাতীয় আগাছায় টুংরো রোগের ভাইরাস বেঁচে থাকে। সবুজ পাতাফড়িং রোগাক্রান্ত গাছ খেয়ে ভাইরাস সংগ্রহ করে সুস্থ গাছে ছড়ায়। সাধারণত আক্রমণের ১৪-২১ দিন পরে রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায়। আক্রান্ত ধানক্ষেতে সবুজ পাতাফড়িং সংখ্যায় বেশি থাকলে রোগটি এক জমি থেকে অন্য জমিতে ছড়িয়ে পড়ে। তাছাড়া যেসব এলাকায় তিন মৌসুমে ধান চাষ করা হয় সেসব এলাকায় টুংরো রোগের প্রকোপ বেশি হতে পারে।

ধানের টুংরো রোগরে জীবানুর অবস্থান

সবুজ পাতা ফড়িং নামের একটি পোকা এই ভাইরাসের বাহক। একটি পোকা টুংরো আক্রান্ত গাছ থেকে রস শোষণ করলে তার পাকস্থলীতে ভাইরাসটি গিয়ে অসংখ্য ভাইরাসের জন্ম হয়। পরে এই পোকা যেসব সুস্থ গাছের রস শোষণ করে - তাতেই ভাইরাসটি ছড়াতে থাকে। তবে ডঃ নাজমুল বারী বলছেন, একবারে পুরো জমির ধান  ভাইরাসে আক্রান্ত হয়না।

av‡bi Uzs‡iv †iv‡Mi Rxevbyi Ae¯’vb

সবুজ পাতা ফড়িং (Nephotettix virescen ) নামের একটি পোকা এই ভাইরাসের বাহক। একটি পোকা টুংরো আক্রান্ত গাছ থেকে রস শোষণ করলে তার পাকস্থলীতে ভাইরাসটি গিয়ে অসংখ্য ভাইরাসের জন্ম হয়। পরে এই পোকা যেসব সুস্থ গাছের রস শোষণ করে - তাতেই ভাইরাসটি ছড়াতে থাকে। তবে ডঃ নাজমুল বারী বলছেন, একবারে পুরো জমির ধান ভাইরাসে আক্রান্ত হয়না।

av‡bi Uzs‡iv †iv‡Mi AbyKzj AvenvIqv t

iv‡Zi ZvcgvÎv 16-20 wWMÖx †mjwmqvm| 10 N›Uve¨vwc w`‡bi ZvcgvÎv 25-30 wWMÖx †mjwmqvm Ges 10 N›Uve¨vwc iv‡Zi ZvcgvÎv 10 wWMÖx †mjwmqvm Gi Dc‡i| Av‡cwÿK Av`ªZv 90% Gi Dc‡i Ges ‡gNvQbœZv|

av‡bi Uzs‡iv †iv‡Mi Rxevbyi we¯Ívi

রোগটি আউশ আমন মৌসুমে বেশি হয়। টুংরো আক্রান্ত চারা রোপণের মাধ্যমে রোগ ছড়ায়। সবুজ পাতাফড়িং (নেফোটেটিকস ভাইরেসেন্স), আশপাশে স্বেচ্ছায় গজানো রোগাক্রান্ত গাছ, বাওয়া ধান বা ঘাসের মাধ্যমে এই ভাইরাস ছড়িয়ে থাকে। বাহক পোকা আক্রান্ত গাছ থেকে - মিনিট কাল রস শোষণ করেই ভাইরাস সংগ্রহ করতে পারে এবং তা পরবর্তী - মিনিটে সুস্থ গাছে রস শোষণ কালে সংক্রমণ করতে পারে। ফলে সুস্থ গাছটিতেও - সপ্তাহের মধ্যেই রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায়।

av‡bi Uzs‡iv †iv‡Mi †ivMPµ t


 


 

ধানের টুংরো রোগের দমন ব্যবস্থাপনা (প্রতিরোধমূলক প্রতিকারমূলক)

প্রতিরোধমূলক

রোগ সহনশীল জাত যেমন বিআর২২ বিআর২৩, ব্রিধান২৭, ব্রিধান৩১ ব্রিধান৪১ ইত্যাদি চাষ করা।টুংরো আক্রান্ত জমির আশে পাশে বীজতলা করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

প্রতিকারমূলক

†fŠZ `gb

অল্প গাছে আক্রান্ত হলেই সেগুলো উঠিয়ে পুড়িয়ে ফেলতে হবে বা মাটিতে পুঁতে ফেলতে হবে। আর পোকাটিও মেরে ফেলতে হবে।

 

 

cwiPh©vMZ `gb

টুংরো রোগ দমনে কোনও উপায় না থাকলেও জমির সঠিক পরিচর্যা টুংরো রোগ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব| av‡bi Rwg‡Z †Kvb iKg AvMvQv ivLv hv‡e bv Aek¨q Rwg cwi®‹vi cwi”QbZv ivL‡Z n‡e|আড়ালি ঘাস, বাওয়া ধান নিধন করতে হবে।

 ˆRweK `gb

  • আলোর ফাঁদ ব্যবহার করে সবুজ পাতা ফড়িং মেরে ফেলতে হবে।
  • হাতজালের সাহায্যে পোকা ধরে মেরে ফেলতে হবে।

 

 ivmvqwbK `gb

(যেকোনো একটি রাসায়নিক দমন ব্যবস্থা অনুসরণ করুন)

  • এমামেকটিন বেনজয়েট ২০% + থায়ামেথোক্সাম ২০% গ্রুপের ঔষধ যেমন- বেনথিয়াম ৪০ ডব্লিউ ডি জি . গ্রাম প্রতি ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে শতাংশ জমিতে স্প্রে করতে হবে। একর প্রতি মাত্রা ৫০ গ্রাম।
  • থায়ামেথোক্সাম ১৪.% + ল্যাম্বডা সাইহ্যালোথ্রিন ১০.% গ্রুপের ঔষধ যেমন, ল্যামিক্স ২৪. এস সি ২০ মিলি প্রতি ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে শতাংশ জমিতে স্প্রে করতে হবে। একর প্রতি মাত্রা ৪০০ মিলি।
  • ক্লোরোপাইরিফস গ্রুপের ঔষধ যেমন- ডারসবান ২০ইসি/ক্লাসিক ২০ইসি/সাইরেন ২০ ইসি/লিথাল ২০ইসি/পাইরিফস ২০ইসি, ২০ মিলি প্রতি ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে শতাংশ জমিতে স্প্রে করতে হবে। একর প্রতি মাত্রা ৪০০ মিলি।
  • কার্টাপ গ্রুপের ঔষধ যেমন- সানটাপ ৫০ এসপি ২৫ গ্রাম প্রতি ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে শতাংশ জমিতে স্প্রে করতে হবে।
  • কার্বোসালফান গ্রুপের ঔষধ যেমন, মার্শাল ২০ ইসি ২০ মিলি প্রতি ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে শতাংশ জমিতে স্প্রে করতে হবে। একর প্রতি মাত্রা ৪০০ মিলি।
  • ম্যালাথিওন গ্রুপের ঔষধ যেমন, ফাইফানন ৫৭ ইসি/হিলথেওন ৫৭ইসি/মালাডান  ৫৭ ইসি/লিমিথেওন ৫৭ ইসি/রাজথেওন ৫৭ ইসি ২০ মিলি /১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে শতাংশ জমিতে স্প্রে করতে হবে। একর প্রতি মাত্রা ৪০০ মিলি।



Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url