কৃষিতে সোনালী ভবিষ্যতের হাতছানি



 কৃষিতে সোনালী ভবিষ্যতের হাতছানি 



আমরা সকলেই জানি আমাদের এই পৃথিবীতে বহু প্রকারের ব্যাকটেরিয়া বা অনুজীব রয়েছে, এর মধ্যে যেমন  কিছু আছে উপকারী ব্যাকটেরিয়া তেমনি  কিছু আছে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া। আমাদের শরীরের মধ্যেও এই ক্ষতিকর এবং প্রতিরোধী(উপকারী)  ব্যাকটেরিয়ার মধ্যে অনবরত যুদ্ধ চলছে।  ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার কাছে যখন উপকারী ব্যাকটেরিয়া হেরে যায় তখন আমারা রোগাক্রান্ত হয়ে পড়ি। তখন ডাক্তার সাহেব আমাদের বলেন আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেছে। তখন ডাক্তার সাহেব নানান প্রকার ঔষধ ( এক প্রকার বিশ) লিখে আমাদের প্রেসক্রিপশন ভরিয়ে দেন।

 

আমাদের জমিতে আমরা  যখন ফসল ফলাই তখন এই ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াকে প্রতিরোধ করতে আমরা( কৃষি ডাক্তারদের পরামর্শ অনুযায়ী)  নানা প্রকার রাসায়নিক সার এবং কীটনাশক ব্যবহার করি। এর ফলে ফসলের বন্ধু ব্যাকটেরিয়াকে আমরা নিজেরাই প্রতিনিয়ত  ধ্বংস করে চলেছি  অর্থাৎ ফসলের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস করে ফেলেছি।

এখন কীভাবে ফসলের এই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা যায় তা-ই হবে আমাদের আলোচনার বিষয়। 


পাঁচ কেজি কাঁচা গবোর এবং পাঁচ কেজি গোমুত্র ১০০ কেজি পানির সাথে একত্রে গোলাতে হবে। আমরা জানি গবোরের মধ্যে শুধু মাত্র উপকারী ব্যাকটেরিয়া থাকে। ফার্মেন্টেসনের মাধ্যমে এই উপকারী ব্যাকটেরিয়া প্রতি ২০ মিনিটে দ্বিগুণ করা সম্ভব। উপকারী ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধির জন্য তাদের খাদ্য হিসাবে এই গোলানো গবোরের মধ্যে দিতে হবে দুই কেজি ডালের গুড়া( ব্যাসন) এবং এক কেজি আখের গুড়। ৪৮ ঘন্টা পরে এই ১০০ কেজি গোলানো গবোর ৯ টন গবোরের সম পরিমাণ উপকারী ব্যাকটেরিয়া ধারণ করার ক্ষমতা অর্জন করবে।  এই ১০০ কেজি গোলানো গবোর এক হাজার কেজি পানির সাথে মিলিয়ে জমিতে ব্যবহার করা হলে আর কোনো রাসায়নিক সার ব্যবহার করার প্রয়োজন হবেনা। কারণ মাটিতে যখন এই কোটি কোটি উপকারী ব্যাকটেরিয়া প্রয়োগ করা হয় তখন ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া পরাজিত হয়ে মাটি ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয় এবং উপকারী ব্যাকটেরিয়া ক্রমাগত বৃদ্ধি পেতে থাকে।   এখানে আরও বলে রাখি এই তরল গবোর গাছে স্প্রে করা হলে কোনো প্রকার ছত্রাক নাশক  বা কীট নাশক ব্যবহারের প্রয়োজন হবেনা। 

যারা কৃষি নিয়ে পড়াশোনা করেন তারা জানেন সমস্ত পৃথিবীর কৃষকেরা এই পদ্ধতি গ্রহণ করে বিশ মুক্ত ফসল ফলাতে ব্যাপক ভুমিকা রাখছে। ভারতে ড. সুভাষ পালেকর এই পদ্দতি প্রয়োগ করে স্বার্থক হবার ফলে ভারত সরকার তাকে পদ্মশ্রী উপাধি প্রদান করেছেন। SPK Agriculture লিখে গুগল সার্স দিলে এই বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।  বাংলাদেশেও এই পদ্ধতির ব্যবহার শুরু হয়েছে। আমরা তাহলে পিছিয়ে থাকবো কেনো? আসুন আমরাও------------


  প্রফেসর বিজন কৃষ্ণ মৃধা। 

নাজিরপুর, পিরোজপুর। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url