সূর্যমুখী তেল

 

সূর্যমুখী তেল

সূর্যমুখী তেল

সূর্যমুখী চাষের মাধ্যমে বাংলাদেশে ভোজ্যতেলের বিশাল সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। সরকারের কৃষিবিভাগ বিশেষ কর্মসূচির মাধ্যমে ২৫০ উপজেলায় বিনামূল্যে বীজ, সারসহ সার্বিক সহায়তা দিচ্ছে। উৎপাদনে সাফল্য আসছে। 

এখন চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, কৃষক যেন সূর্যমুখীর বীজ বিক্রি করতে পারে। ভোক্তারা যদি অত্যন্ত উপকারী এই তেল ব্যাপকভাবে গ্রহণ না করে, তাহলে কৃষকরা উৎসাহ হারিয়ে ফেলবে। ব্যাপকভাবে বাজার পেতে হলে সূর্যমুখী তেলের দাম সয়াবিন তেলের সমান হতে হবে। এটা সম্ভব। এজন্য সারা দেশে জেলায় জেলায় ব্যাপারি দরকার। তারা নির্ধারিত রেটে বীজ কিনে নির্বাচিত মিলে সাপ্লাই দিলে এবং সেই মিলগুলো সীমিত লাভে নতুন উদ্যোক্তাদের কাছে বিক্রি করলে সাধারণ ক্রেতারা সয়াবিন তেলের সমান দামে কিনতে পারবে।


বছরে কম-বেশি ২৫ হাজার কোটি টাকার ভোজ্যতেল আমদানি হয় বাংলাদেশে। এতে বৈদেশিক মুদ্রার উপর ব্যাপক চাপ পড়ে। কর্পোরেট কোম্পানিগুলো ও বিদেশী রপ্তানিকারকরা এই বাজার দখলে রাখতে চায়। কিন্তু একদিকে কৃষক কর্তৃক পর্যাপ্ত উৎপাদন এবং কয়েক শত নতুন উদ্যোক্তা সম্মিলিতভাবে এলাকা ভাগ করে সঠিক দামে তেল বাজারজাত করলে বিশাল তেলের বাজার নিজেদের হাতে রাখা সম্ভব। 


মূল বিষয় হচ্ছে, শুধু উচ্চবিত্তদের মধ্যে এই তেল সীমাবদ্ধ থাকলে বাজার বড় হবে না। বাজার বড় না হলে উৎপাদন বাড়বে না। বাজার বড় মানে আমদানিকৃত সয়াবিন তেল সরিয়ে স্থানীয় সূর্যমুখী তেলকে জায়গা করে দিতে হবে দাম সমান করে এবং উপকারিতা সম্পর্কে প্রচারণার মাধ্যমে। 


খেয়াল করুন, সরিষা তেলের বাজারের বড় অংশ স্থানীয়দের হাতেই। এর দাম একটু বেশি হওয়ায় ব্যাপকভাবে ব্যবহার হচ্ছে না। সরিষার চেয়ে সূর্যমুখীর প্রোডাকশান বেশি এবং উৎপাদন খরচ কম। তাই সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে বাজার ধরলে কৃষক অল্প লাভে বিক্রি করলে বছরব্যাপী লাভবান হবে। এক্ষেত্রে ছোট কোম্পানিদেরকেও অল্প লাভের চিন্তা করে ব্যাপক বিক্রির টার্গেট করতে হবে। 


আমি এটা নিয়ে কাজ করতে চাই। আগ্রহীরা এগিয়ে আসুন। আলোচনা ও বিতর্কের মাধ্যমে সঠিক পথ আমরা তৈরি করে নিতে পারবো। চায়ের ব্যবসা এদেশে ছোট আকারে শুরু হয়েছিল। তবে শিক্ষিত ও দূরদর্শী উদ্যোক্তারা কতগুলো নিয়ম অনুসরণ করে বিশ্ব জয় করেছে। সূর্যমুখী তেল তার চেয়েও সম্ভাবনাময়। কারণ ভোজ্যতেল জরুরি পণ্য। এর বিকল্প নেই।


লেখক

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url