ধইঞ্চা চাষ থেকে কীভাবে সবুজ সার তৈরি করবেন
ধইঞ্চা চাষ থেকে কীভাবে সবুজ সার তৈরি করবেন
ডাল ফসল হিসেবে ধইঞ্চা চাষ করা হয়। তবে এর গাছপালাও সবুজ সার তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। মাটিতে নাইট্রোজেন ও জৈব পদার্থের পরিমাণ বাড়াতে যখন সবুজ গাছকে পচন ছাড়াই চূর্ণ করা হয় এবং জমিতে লাঙল দিয়ে চাপ দেওয়া হয়, তখন এই প্রক্রিয়াটিকে সবুজ সার তৈরি বলে। সবুজ সার তৈরির জন্য সুনাই, ধইঞ্চা, গাওয়ার, গাওরি, মুগ এবং কাউপিয়া জাতীয় শস্য ব্যবহার করা উচিত। কারণ এ ধরনের ফসলে নাইট্রোজেন ও জৈব উপাদান বেশি পরিমাণে তৈরি হয়।
সবুজ সার তৈরির জন্য বর্ষায় ধইঞ্চা বপন করা হয়। এর গাছ যে কোনো ধরনের জলবায়ু ও মাটিতে জন্মাতে পারে। জলাবদ্ধ স্থানেও এর চাষ করা যায়। কারণ এর উদ্ভিদ 60 সেন্টিমিটার জল ভরাটের মধ্যেও সহজেই বিকাশ লাভ করে।
ধইঞ্চার অনেক জাত রয়েছে যার ভিতরে এমন উপাদান রয়েছে যা জমির সার শক্তি বাড়ায়। এ কারণে কৃষক ভাইয়েরা সবুজ সার আকারে চাষ করেন। সবুজ সার হিসেবে ধইঞ্চা চাষের জন্য বর্ষার আগেও লাগানো যেতে পারে। এর উদ্ভিদের জলের অস্বাভাবিক প্রয়োজন রয়েছে। পান্ত ধাইঞ্চা এবং হিসার ধাইঞ্চা ধইঞ্চার এমন দুটি জাত যা থেকে দেড় থেকে দুই মাসে মাটিতে ভালো মানের সবুজ সার দেওয়া যায়।
এর চারা রোপণের পর যখন এর দৈর্ঘ্য চার থেকে পাঁচ ফুট হয়ে যায়, তখন এর চারা লাঙল দিয়ে চাষ করে ক্ষেতে নিজেই কেটে ফেলা হয়। যার কারণে মাঠে সবুজ সার তৈরি হয়। এ থেকে সার তৈরির জন্য ধইঞ্চা তোলার পর চার থেকে পাঁচ দিনের ব্যবধানে ক্ষেতে দুই থেকে তিনবার লাঙল দিতে হবে। এভাবে এক থেকে দেড় মাস চাষ করলে 20-25 টন সবুজ সার এবং 85-100 কেজি পর্যন্ত নাইট্রোজেন পাওয়া যায়। যার কারণে খামারের সারের ক্ষমতা উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পায়।
জমিতে সবুজ সার তৈরি করলে মাটি আলগা হয়ে যায়। এ ছাড়া জমিতে বায়ু চলাচল ভালো থাকে। এবং জমির পানি ধারণ ক্ষমতা, অম্লতা এবং ক্ষারত্বেও উন্নতি দেখা যায়। সবুজ সার তৈরির ফলে ক্ষেতে মাটির ক্ষয় কম হয়।
মাটিতে সবুজ সার ব্যবহার করলে মাটিতে পাওয়া উপকারী অণুজীবের সংখ্যা ও কার্যকলাপ বৃদ্ধি পায়। যার কারণে মাটির সার ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। আর মাটিবাহিত রোগও কমে। এতে কৃষক ভাইদের কৃষিকাজে রাসায়নিক সারের ব্যয়ও কমে যাবে।