রবি ফসল কি কি ।

 

রবি ফসল কি কি ।

রবি ফসল কি কি ফসলের ফলন বাড়াতে বপন পদ্ধতি, মাটি সার ব্যবস্থাপনা কৌশল

আমাদের দেশে রবি মৌসুম শুরু হয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে কৃষকরা প্রধান রবি শস্য বপন শুরু করেছেন। বর্তমান সময়ে কৃষিকাজ হয়ে উঠেছে প্রযুক্তি মেশিন নির্ভর। এমতাবস্থায় সঠিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ করতে কৃষক ভাইদের কাছে রবি মৌসুমের কৃষি সংক্রান্ত সঠিক তথ্য থাকা খুবই জরুরী। আবহাওয়া নতুন প্রযুক্তি সম্পর্কে সঠিক তথ্য না থাকলে তা ফসলের উৎপাদনেও প্রভাব ফেলতে পারে। এমতাবস্থায় বেশি উৎপাদন পেতে কৃষক ভাইদের কী করা উচিত যাতে ফলনও বেশি হয় এবং কৃষকরাও ভালো লাভ করতে পারে।

আজ আমরা আমাদের কৃষক ভাইদের রবি শস্যের ফলন বাড়ানোর জন্য বীজ বপনের পদ্ধতি, মাটি সার ব্যবস্থাপনার কৌশল সম্পর্কে অবহিত করব, যা আপনার ফসলের খরচ কমাতে এবং উৎপাদন বাড়াতে সহায়ক হবে। 

কি কি রবি মৌসুমের প্রধান ফসল

অক্টোবর নভেম্বর মাসে রবি শস্য বপন করা হয় যা কম তাপমাত্রায় বপন করা হয়, ফেব্রুয়ারি এবং মার্চ মাসে ফসল তোলা হয়। আলু, মসুর, গম, যব, মসুর, ছোলা, মটর এবং সরিষা প্রধান রবি শস্য। অন্যদিকে রবি মৌসুমের প্রধান সবজি ফসলের মধ্যে রয়েছে টমেটো, বেগুন, লেডিফিঙ্গার, আলু, লাউ, করলা, করলা, শিম, ফুলকপি, বাঁধাকপি, মুলা, গাজর, শালগম, মটর, বীট, পালং শাক। পেঁয়াজ, আলু, মিষ্টি আলু ইত্যাদি সবজি চাষ করা হয়।

কি কি রবি মৌসুমের ফসল বপনের সময়

গম:  গম রবি মৌসুমের অন্যতম প্রধান ফসল। গম বপনের উপযুক্ত সময় মধ্য অক্টোবর থেকে মধ্য নভেম্বর পর্যন্ত।

যব: রবি মৌসুমে বপন করা প্রধান ফসলের মধ্যে যব অন্যতম। উপযুক্ত সেচ ব্যবস্থা আছে এমন এলাকায়। সেখানে বার্লি ১৫ নভেম্বরের মধ্যে বপন করতে হবে। 

ছানা : ছোলা বপন করতে হবে ২০শে নভেম্বরের মধ্যে। ছোলা বপনের 25 থেকে 30 দিন পর আগাছা দমনের জন্য আগাছা দমন করতে হবে।

মটর : মটর বপন করতে হবে অক্টোবর থেকে মধ্য নভেম্বর পর্যন্ত। মটর বপনের 20 দিন পর আগাছা নিয়ন্ত্রণের জন্য আগাছা পরিষ্কার করতে হবে। মটর বপনের ৩৫ থেকে ৪০ দিন পর প্রথম সেচ দিন। প্রথম সেচের - দিন পর প্রয়োজন অনুযায়ী নিড়ানি  দিতে হবে।

মসুর ডাল : ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত সময় মসুর বীজ বপনের উপযুক্ত সময়।

ভুট্টা : শীতকালীন ভুট্টার বপন অবশ্যই নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে শেষ করতে হবে যেখানে সঠিক সেচ ব্যবস্থা আছে। ভুট্টা বপনের 25 থেকে 30 দিন পর প্রথম সেচ দিতে হবে।

আলু:  অক্টোবরে আলু বপন করা সম্ভব না হলে নভেম্বর মাসের মধ্যেই করতে হবে।

টমেটো: টমেটোর বসন্ত/গ্রীষ্মকালীন ফসল বপন করতে, বীজগুলি নার্সারিতে বপন করতে হবে 

 

চাষ এবং জমি চাষের সুবিধা

রবি শস্যের সঠিক উৎপাদন পেতে, সঠিক উপায়ে লাঙ্গল চাষ মাটি শোধন করে নিম্নলিখিত সুবিধা পাওয়া যায়

সঠিকভাবে চাষ মাটি শোধন করলে জমিতে আগাছা প্রতিরোধ করা যায়।

ফসল বপনের সময় সঠিকভাবে মাটি তৈরি করলে বেশি ফলন পাওয়া যায়।

মাটি পরীক্ষা করে যেসব পুষ্টি উপাদান মাটিতে থাকে না সেগুলো পূরণ করার চেয়েও বেশি পাওয়া যায়।

মাটি শোধনের মাধ্যমে মাটিতে রোগ পোকার সমস্যা থেকেও মুক্তি পাওয়া যায়।

পোকা ফসলের একটি প্রধান সমস্যা। যে ক্ষেতে উইপোকার উপদ্রব দেখা যায়, সেই জমিতে বীজ বপনের আগে কুইনালফস 1.5% পাউডার প্রতি হেক্টর প্রতি 25 কেজি পরিমাণে মিশিয়ে দিলে উইপোকা সমস্যা হয় না।

রবি মৌসুমের ফসল বপনের পদ্ধতি

সারি পদ্ধতিতে রবি মৌসুমের ফসল বপন করতে হবে। এতে কৃষককে বীজ ড্রিল বা জিরো টিলেজ মেশিন করতে হবেব্যবহার করা উচিত যাতে কৃষকরা বীজ বপনের সময় সঠিক পরিমাণে বীজ প্রয়োগ করতে পারে। এতে সারি থেকে সারি এবং গাছের দূরত্ব নির্ণয় করা যায়, যা বিভিন্ন কৃষি কাজ যেমন আগাছা, কুড়াল ইত্যাদি করতে উপকারী। রবি শস্যের উৎপাদন বাড়াতে ফসলে সঠিক পরিমাণে থেকে টন জৈব সার সার ব্যবহার করতে হবে। যেসব এলাকায় সেচের উপযুক্ত ব্যবস্থা নেই, সেখানে উপযুক্ত সার দিয়ে বীজ বপনের আগে ক্ষেতের চূড়ান্ত লাঙলের সময় পূর্ণ পরিমাণ সার সার দিতে হবে। যেখানে সঠিক সেচের ব্যবস্থা আছে সেখানে বপনের সময় নাইট্রোজেনের অর্ধেক এবং ফসফরাস পটাশের পূর্ণ পরিমাণ প্রয়োগ করতে হবে। অবশিষ্ট পরিমাণ নাইট্রোজেন অল্প অল্প করে দুই থেকে তিনবার প্রয়োগ করতে হবে।

মাটির স্বাস্থ্য এবং সার কীভাবে ব্যবহার করবেন

রবি শস্য চাষের প্রস্তুতির পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো মাটির স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং সার ব্যবস্থাপনা। মাটির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার জন্য, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল মাটি পরীক্ষা করা। বর্তমানে রাসায়নিক সারের ক্রমবর্ধমান ব্যবহারে আমাদের খামারের মাটি পরিবেশের উপর প্রভাব পড়ছে। কৃষক ভাইদের ভারসাম্যহীন রাসায়নিক সার ব্যবহারের ফলে মাটির সার শক্তি ক্ষীণ হয়ে আসছে। এর পাশাপাশি আমাদের খামারের মাটিতে জীবাণু অণুজীবের সংখ্যাও ক্রমাগত কমছে।  কারণে গাছের বৃদ্ধি ফসল উৎপাদনে বিরূপ প্রভাব পড়ছে।  জন্য কৃষকদের রবি শস্য বপনের আগে তাদের মাটি পরীক্ষা করতে হবে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী সুষম পরিমাণে সার ব্যবহার করতে হবে। যাতে কৃষকরা বেশি ফসল উৎপাদনের সুফল পেতে পারেন। 

 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url