সার প্রয়োগের কিছু সাধারণ নীতি

 

সার প্রয়োগের কিছু সাধারণ নীতি


সার প্রয়োগের কিছু সাধারণ নীতি

বীজ, নতুন শিকড় ও গুল্ম জাতীয় গাছের কা-ের অতি সন্নিকটে বা কোনো ভেজা কচি পাতার ওপর রাসায়নিক সার ব্যবহার করা মোটেই উচিত নয়। রাসায়নিক সারগুলো এক ধরনের ঘনীভূত লবণ বিধায় এগুলো গাছের নাজুক সব বাড়ন্ত অংশকে পুড়িয়ে দিতে পারে। সার যত দূর সম্ভব ভালোভাবে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে। ইউরিয়া সার জমিতে দাঁড়িয়ে থাকা গভীর পানিতে প্রয়োগ করা উচিত নয়। মনে রাখবেন, জিঙ্ক ও ফসফেট সার একত্রে মিশিয়ে প্রয়োগ করা উচিত নয়। কেননা এসব সারের উপাদানগুলো একে অপরের সঙ্গে আবদ্ধ হয়ে যায় এবং ফসল তা গ্রহণ করতে পারে না। জৈব সার ফসল বপন/রোপণের কমপক্ষে ৭-১০ দিন পরে জমিতে ধানের চারা রোপণ করতে হবে। সবুজ সার হিসেবে ধৈঞ্চা মাটিতে মিশানোর কমপক্ষে ৭ দিন পর ধানের চারা রোপণ করতে হবে। গৌণ উপাদানের (গাছের জন্য যে খাদ্যোপাদান কম প্রয়োজন যেমন জিংক, বোরন, ম্যাঙ্গানিজ এসব) দ্রবণ পাতায় ছিটিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে (বিশেষ করে উদ্যান ফসলের ক্ষেত্রে)। সাধারণ ইউরিয়ার পরিবর্তে গুটি ইউরিয়া ব্যবহার করলে শতকরা ১৫-২০ ভাগ বেশি ফসল পাওয়া যায় এবং পরিমাণে শতকরা ৩০ ভাগ কম লাগে। তাছাড়া গুটি ইউরিয়া মৌসুমে একবার ব্যবহার করতে হয়।


জমিতে তিন পদ্ধতিতে সার প্রয়োগ করা হয়। হাতে ছিটানো, স্থানীয় প্রয়োগ এবং পাতায় বা পল্লব গুচ্ছে সিঞ্চন/ছিটিয়ে দেয়া। হাতে ছিটানো পদ্ধতি সাধারণত মাঠ ফসলে এবং স্থানীয় প্রয়োগ সাধারণত ফল বাগান ও সবজিতে করা হয়। রাসায়নিক সার ব্যবহারের ফলপ্রসূতা বাড়ানোর জন্য ফসল ও মৌসুমের ওপর ভিত্তি করে সার ব্যবহারের সাধারণ নির্দেশাবলি অনুসরণ করা উচিত।

ধান চাষের বেলায় ইউরিয়া ০৩ অংশে ভাগ করে প্রয়োগ করা উচিত। শাকসবজি চাষের বেলায় ফসলের বৃদ্ধির পর্যায়ের সঙ্গে সমন্বয় করে ইউরিয়া ২-৩ ভাগে ভাগ করে প্রয়োগ করা যায়। স্বল্পমেয়াদি ফসলের ক্ষেত্রে ইউরিয়া সারের পুরোমাত্রা শেষ চাষের সময়েই প্রয়োগ করা যায়। অধিকাংশ মশলার ক্ষেত্রে ইউরিয়া সার ২-৩ ভাগে ভাগ করে প্রয়োগ করতে হবে। ভেজা মাটি অথবা জো আসা মাটিতে পড়ন্ত বিকালে ইউরিয়া উপরিপ্রয়োগ করে উত্তমরূপে মিশিয়ে দিলে সর্বাধিক সুফল পাওয়া যায়।



ফসফেট সার জমি তৈরির সময় শেষ চাষের ২/১ দিন আগে প্রয়োগ করা উচিত এবং দস্তা সারও শেষ চাষের সময় প্রয়োগ করতে হবে। জমি তৈরির শেষ চাষে পটাশ ও গন্ধক জাতীয় সারগুলো একবারে প্রয়োগ করা চলে। তবে মোটা বুনটযুক্ত মাটিতে পটাশ সার দুইভাগে ভাগ করে ব্যবহার করা যায়।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url