উদ্ভিদের পুষ্টি উপাদানের অভাব জনিত লক্ষন

উদ্ভিদের  পুষ্টি  উপাদানের অভাব জনিত লক্ষন



 নাইট্রোজেনের অভাব জনিত লক্ষনঃ-

১.গাছের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যাহত হয়।
২.দানাজাতীয় শস্যের কুশি কম হয়।
৩.ঘাটতি প্রকট হলে পুরাতন পাতা বাদামী হয়।
৪.গাছের গোড়ার পাতা প্রথমে হালকা সবুজ রঙ ধারণ করে।
৫.উদ্ভিদের সাধারণ শকরা তৈরি ক্ষমতা কমে যায় পরে আস্তে আস্তে হ্লুদ হয়ে যায়।
৬.গাছের পাতা আগাম ঝরে যায় ফলে গাছ বাড়তে পারেনা।
৭.চিকন ও খাটো কুড়ি দেখা যায় ফলে ছোট ও অসাভাবিক হয়,বীজের আকার ছোট হয়।
৮.নিদিষ্ট সময়ের আগেই গাছের পরিপক্কতা আসে।
৯.নাইট্রোজেনের অভাবে গাছের শিকড়ের বিস্মৃতি কমে যায়।
১০.লতা জাতীয় গাছ কুকড়িয়ে যায়।

ফসফরাসের অভাব জনিত লক্ষনঃ-

১.ফসফরাসের অভাবে ফসল পাকতে দেরি হয়।
২.ফুল ফল ও বীজ উৎপাদন কম হয়।
৩.গাছের শিকড় বৃদ্ধি কম হয়।
৪.প্রথমে গাছের পাতা অতিরিক্ত সবুজ হয়।
৫.ফুল ফলের গঠন আকার নষ্ট হয়।
৬.এর পরে গাছের মুল বৃদ্ধি ব্যহত হয়।
৭.শিমজাতীয় উদ্ভিদের ফুলে পুষ্টি কমে যায়।
৮.পুরাতন গাছের পাতা কমলা রঙ হয়।
৯.পত্রফলকের প্রান্ত নীচের দিকে বেকে যায়।
১০.গাছের পাতা কম হয় ফল ঝরে যায়।

পটাশিয়ামের অভাবজনিত লক্ষনঃ-

১.গাছের পাতার অন্তঃশিরার এলাকায় ফ্যকাশে দেখা যায়।
২.গাছের পাতা ও ফল ঝরে যায়।
৩.গাছের নীচের দিকের কিনারা পুড়ে যায়।
৪.শস্য গাছের পাতা ছোট হয়ে যায়।
৫.গাছের বৃদ্ধি ব্যহত হয় কুশি কমে যায়।
৬.উদ্ভিদের বাড়ন্ত অংশ এর বৃদ্ধি কমে যায়।
৭.দানাজাতীয় ফসলের পরিপক্কতা বিলম্বিত হয়।
৮.রোগ পোকার আক্রমনের প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পায়
৯.দানাদার ফসল সহজে হেলে পড়ে।
১০.পটাশ সারের অভাবে গাছের পাতা পুড়ে যাওয়ার মত হয়।

ক্যালসিয়ামের অভাব জনিত লক্ষনঃ-

১.পাতার কিনারা শিরা হলুদ ও বাদামী হয়।
২.গাছ বেটে হয়ে যায়।
৩.গাছের কুড়ি বন্ধ হয়ে যায়।
৪.শাখার অগ্রভাগের পাতা কুকড়িয়ে যায়।
৫.শিমজাতীয় ফসলের বৃদ্ধি ব্যহত হয়।
৬.ফল ও ফুলের কড়ি অসময়ে ঝরে যায়।
৭.পাতায় ছোপ ছোপ দাগ পড়ে।
৮.বীজ পরিপক্ক হয় না।
৯.মুল ও শিকড়ের বৃদ্ধি ব্যহত হয়।

ম্যগনেসিয়ামের অভাব জনিত লক্ষনঃ-

১.গাছের শাখা ও পাতার বোটা সরু হয়।
২.তুলা গাছে ফিকে গোলাপী হতে লাল ধরনের সবুজ শিরাযুক্ত পাতা দেখা যায়।
৩.সরিষা গাছের পাতার ঘন কমলা ও রঙ দেখা যেতে পারে।
৪.তামাক ও শিমগাছের পাতায় পচন ধরে।
৫.গাছ জন্মের প্রথম দিকে পাতা ঝরে যায়।
৬.গাছের পাতা ফ্যাকাশে হয়ে যায়।
৭.তেলবীজ ফসলের বীজের তেলের পরিমান কমে যায়।

সালফার বা গন্ধকের অভাব জনিত লক্ষনঃ-

১.গাছের পাতা ধুসর ও বাদামী হয়।
২.গাছ বেটে ও খাটো হয় ও পচন ধরে।
৩.গাছের বৃদ্ধি ও কুশি কমে যায়।
৪.তেল জাতীয় ফসলে তেলের পরিমান কমে যায়।
৫.ধান গাছের নতুন পাতা হলুদ হয়ে যায়।
৬.লেবু জাতীয় ফসলের সাদা পাতা বের হয়।
৭.কান্ড কালো হয় ওপরিপক্কতা দেরিতে হয়।
৮.ধানে চিটা হয় ফলন কমে যায়।
৯.টমেটোর পাতা হালকা সবুজ হয়।

লোহের অভাব জনিত লক্ষনঃ-

১.পাতার সবুজ কনিকা সৃষ্টিতে ব্যাঘাত ঘটে।
২.ফ্যাকাসে ভাব সমস্ত পাতায় ছড়িয়ে পড়ে।
৩.বেশি অভাব হলে পাতা সাদা হয়।
৪.সয়াবিন,কমলালেবু সবজি জাতীয় পাতায় পচন হয়।
৫.গাছের কচি পাতার মাঝখানে পচন ধরে।
৬.বীজতলায় ধানের কচি পাতা হলুদ হয়।
৭. ফল ও গাছের পাতায় বাদামী দাগ দেখা যায়।
৮.উদ্ভিদ আকারে ছোট হয়।

ক্লোরিনের অভাব জনিত লক্ষনঃ-

১.টমেটোর গাছের পাতার রঙ হলুদ হয়।
২.ঘাটতি বেশি হলে পাতা পুড়ে যাওয়ার মত দেখা যায়
৩.গাছের পাতা নেতিয়ে পড়ে।

দস্তার অভাব জনিত লক্ষনঃ-

১.তামাক গাছের পুরানো পাতায় দাগ পড়ে।
২.কচি পাতার গোড়া সাদা হয় ধানের ক্ষেত্রে।
৩.গাছের বাড়ন্ত অংশে বৃদ্ধির হার কমে যায়।
৪.লেবু গাছের পাতা কোকড়ানো দেখা যায়।
৫.গাছের পাতায় আগাম বাদামী দাগ দেখা যায়।
৬.ভুট্রার পাতার শিরার মাঝে পচন দেখাযায়।
৭.জমিতে চারার বাড়তি সমান হয়না।
৮.গাছের পাতা কমে যায়।পাতার আকার ছোট হয়।কোন সময় পাতার কিনারা কুকড়িয়ে যায়।
৯.উদ্ভিদের পব্যমধ্য খাটো হয়।
১০.মুলত কান্ডের অগ্রভাগ শুকিয়ে যায়।

ম্যাজ্ঞনিজের অভাব জনিত লক্ষনঃ-

১.গাছের ফুল ও ফল ধরতে দেরি হয়।
২.গাছে নানারকম রোগ দেখা যায়।
৩.কোন গাছ বামন/খাটো হয়।
৪.পাতার রঙ জলে যায় হলদে ও বাদামী রং দেখা যায়।
৫.আগার পাতা অধিক সবুজ দেখা যায়।
৬.শিমের পাতা হ্লুদ হয় পাতার শিরা পুষ্ট হয়।
৭.গমে ক্লোরসিস ও যবের পাতায় বাদামী দাগ দেখা যায়।

মলিবডেনাম এর অভাব জনিত লক্ষনঃ-

১. শিমজাতীয় গাছ হলদে ও বামন আকারের হয়।
২.অনেক গাছের পাতা ফ্যাকাশে দেখা যায়।
৩.ফুলকপিতে হুইপ টেইলর রোগ দেখা যায়।
৪.এর অভাবে পাতা ও গাছ লম্বাটে ও চাবুকের মতহয়।
৫.পুরাতন পাতা কুকড়িয়ে যায় ও হলুদ হয়।
৬.গাছের পাতা আকারে ছোট হয়।
৭.অভাব তীব্র হলে পাতা ঝরে পড়ে।

তামার অভাব জনিত লক্ষনঃ-

১.তামাক গাছ দুবল হয়ে ঝরে পরে।
২. লেবু ভুট্রা ও পেয়ারা গাছে ডাইব্যাক রোগ দেখা যায়
৩.গাছ উপরের দিক থেকে আস্তে আস্তে মরে আসতে থাকে।
৪.গমের নতুন পাতায় পাডু রোগ দেখা যায়।
৫.ভুট্রার পাতার আগা হলুদ হয়।
৬.শিমজাতীয় ফসলে শিকড় কমে যায় ফুল আসার আগে মারা যায়।

বোরনের অভাব জনিত লক্ষনঃ-

১. পরাগায়ন অসম্পূর্ণ থাকে বলে ফুল ও ফল ছোট ও বাকানো হয়।
২. শিমের মধ্যভাগ পচে কালচে হয়।
৩.লেবু শক্ত ও পেপে ফ্যাকাসে হয়।
৪.ফুলকপির মাঝখানে বাদামী রঙ দেখা যায়।
৫.তামাকের উপরি শিরা পচে যায়।
৬.শিমজাতীয় গাছে গুটি কমে যায়।
৭.অনেক গাছের আগার পাতা বিকত হয়।
৮.শিকড় গুটির আকার হয় ফলে নাইট্রোজেন মাটিতে কম আবদ্ধ হয়।
৯.গাছের কান্ড, গুড়ি ও শিকড়ের বাড়তি কমে যায়।
১০. গাছের মুল ও কান্ডের অগ্রভাগ নিজের কাজ থেকে গুটিয়ে নেয়।
১১.বেগুনের ফলের ছাল ফেটে যায়।
১২.আখসহ বিভিন্ন উদ্ভিদের পব্যমধ্য খাটো হয়।


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url