চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম ও চিয়া সিড কি

 
চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম।


 

চিয়া সিড কি চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম।

 

চিয়া সিড: চিয়া সিড হলো এমন একটি উদ্ভিদের বীজ যা মানব শরীরের জন্য খুব উপকারী। চিয়া সীডের আলাদা বাংলা কোন নাম নেই এটি চিয়া বীজ নামেই পরিচিত। অনেক পুষ্টিকর খাবারের মধ্যে চিয়া বীজ অন্যতম এবং এই বীজকে সুপার ফুডও বলা হয়ে থাকে। চিয়া বীজে আছে অনেক পুষ্টিকর উপাদানে ভরপুর। এই চিয়া বীজ হলো কালো সাদা রঙের। এই চিয়া বীজ হলো আকারে অনেক ছোট হলেও এর গুনাগুন অনেক মান সম্পন্ন। এই চিয়া বীজ হচ্ছে সালভিয়া হিসপানিকা নামক মিন্ট প্রজাতির উদ্ভিদের বীজ। এই চিয়া বীজের আদি জন্মস্থান হলো সেন্ট্রাল আমেরিকায়। প্রাচীন আদিবাসী অ্যাজটেক জাতির খাদ্য তালিকায় এই চিয়া বীজ থাকার প্রমাণ পাওয়া গিয়াছে। প্রাচীন অধিবাসিরা এই চিয়া বীজকে শক্তি যোগানোর উৎস হিসেবে মনে করতো। চিয়া সাধারনত শস্যের মধ্যে পড়ে। এই চিয়া বীজ সবধরণের আবহাওয়াতে হতে পারে। চিয়া বীজের পুষ্টি গুনাগুন গবেষনা করে দেখা গেছে দুধে যে পরিমাণ ক্যালসিয়াম থাকে তার থেকে গুণ বেশী ক্যালসিয়াম চিয়া বীজে পাওয়া যায়।

 

 



চিয়া সিড উৎপত্তি : চিয়া সিডের উৎপত্তি স্থান হলো দক্ষিণ আমেরিকাতে। কিন্তু বর্তমানে বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় এটি জন্মাচ্ছে। বছর ধরে গবেষণা করার পর গবেষকরা এই বীজের সফলতার দিক খুজে পেয়েছে। বাংলাদেশের গবেষকরা এই চিয়া বীজ দেশে আনেন এবং এই চিয়া বীজকে অভিযোজনের মাধ্যম হিসাবে উপযোগী করে তোলার চেষ্টা করছেন, আর তার পর থেকে আস্তে আস্তে অনেকাংশে এই বীজের চাষাবাদ শুরু হতে থাকে।

 

 

চিয়া সিড পুষ্টিগুণ : এই চিয়া বীজে এতো পরিমাণ পুষ্টি রয়েছে যার জন্য এই বীজকে সুপার ফুড বা খাদ্য হিসাবে আখ্যায়িত করা হয়। কমলাতে যে পরিমাণ ভিটামিন-সি রয়েছে তার থেকে গুণ বেশি ভিটামিন-সি রয়েছে এই চিয়া বীজে। আরো জানা যায় যে, পালং শাকের চেয়ে বেশি পরিমাণে আয়রণের মাত্রা রয়েছে এই চিয়া বীজে।

 

* এই বীজে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, প্রোটিন, ওমেগা- ফেটিএসিড আছে।

 

 

চিয়া সিড আরো অনেক পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান আছে সেটি হলো: এক আউন্স চিয়া বীজে রয়েছে

28 গ্রাম বা 1/6 তম

গ্রাম চর্বি

11 গ্রাম ফাইবার

 

চিয়া অনুরুপ বীজ যেমন শোষন হিসেবে পাওয়া যায় তেমনি এতে খনিজও রয়েছে। উচ্চ এ্যান্টি অক্সিডেন্ট সামগ্রিক স্তরের কারণে চিয়া বীজগুলি অতি তাড়াতাড়ি বিলুপ্ত হয় না।

 

 

 

চিয়া সিড কয়েকটি উপকারীতা উল্লেখ করা হলো :

১। চিয়া বীজ শরীর থেকে বিষক্ত বা টক্রিন পদার্থ বের করে দিতে এই বীজের ভূমিকা অনেক।

২। এই বীজ ভাল ঘুমের কাজ করে থাকে।

৩। হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।

৪। চিয়া সিড মানুষের কর্ম ক্ষমতা শরীরে শক্তি বৃদ্ধি করে।

৫। প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করে।

৬। ইমিউন সিস্টেম স্ট্রং করে।

৭। ব্লাড প্রেসার কোলেস্টরল নিয়ন্ত্রণে রাখে।

৮। ওজন কমায়।

৯। চিয়া সিড গৃহপালিত পশু-পাখির খাদ্য হিসাবে ব্যবহার করা যেতে পারে।

 

    গবেষকদের ধারণামতে আরো জানা যায় যে, এই চিয়া বীজে ক্যালসিয়াম- RDA (Recommended Dietary Allowance 18%), ফসফরাস- RDA এর 27%

এছাড়াও সুপরিচিত জিংক, ভিটামিন-বি- (নায়াসিন পটাসিয়াম), ভিটামিন-বি- (থায়ামিন) ভিটামিন-বি-

মিলিগ্রাম    জিংক

১৩৭ ক্যালোরী      এনার্জি

মিলিগ্রাম    পটাশিয়াম

 



চিয়া সিড অপকারীতা সমূহ 

 চিয়া বীজের যেমন উপকারী দিক আছে ঠিক তেমনি অপাকারীতার দিকও আছে। আর উপকার সম্পর্কে যেমন আমাদের জানা জরুরী তেমনি অসুবিধা সম্পর্কে জানাটা খুব দরকার। নিচে তার কিছু মতামত জানাবো-

১। অতিরিক্ত চিয়া বীজ যদি আমরা খাই তাহলে আমাদের শরীরের ওজন কমিয়ে আনতে পারে।

২। এটি মাত্রাতিরিক্ত খাওয়ার ফলে দেহের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে।

 

চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম

একেক জায়গায় এই চিয়া সিড খাবার বিভিন্ন দেশে আলাদা রকম হয়ে থাকে।

১। সাধারন অর্থে এই চিয়া বীজ পানিতে মিশিয়ে খাওয়া যায়।

২। চিয়া বীজ রুটির সাথে সেবন করা যেতে পারে।

৩। ফলের রসের সাথে খাওয়া যেতে পারে।

৪। গ্লাস পানিতে চা চামচ পরিমাণ ভালভাবে মিশিয়ে আধা ঘন্টা রেখে যদি খালি পেটে খাওয়া হয় তাহলে শরীরের জন্য খুব উপকারী ভূমিকা পালন করবে।

৫। চিয়া বীজ যদি লেবুর রসের সহিত মিশিয়ে খাওয়া হয় তাহলে ভাল ফলাফল পাওয়া যাবে এবং ওজন কমাতে সাহায্য করে।

৬। সকালে খালি পেটে হালকা কুসুম গরম পানিতে ২০ মিনিট ভিজিয়ে রেখে তারপর সেবন করুন।

 

সিড কোথায় পাওয়া যেতে পারে : বাংলাদেশেই পাওয়া যায় এই চিয়া সিড। বাংলাদেশের গবেষকরা এই বীজের আবির্ভাব ঘটায় বাংলাদেশের ভূমিতে। এই চিয়া বীজ বাংলাদেশের বড় বড় দোকানে এই বীজ পাওয়া যেতে পারে। প্রতি ১০০ গ্রাম বীজ ৩০০-৪০০ টাকা দামে বিভিন্ন জায়গায় পাওয়া যায়। এই চিয়া সিড কোন কোন জায়গাতে কম দামে পাওয়া যেতে পারে। এই বীজের গুনাবলী সম্পর্কে এখনও মানুষ অনেকাংশে না জানার কারণে এখনো বেশি করে মানুষের মাঝে এটি ব্যাপকভাবে আবির্ভূত হতে পারেনি। তাই অনেক জায়গায় নাও পাওয়া যেতে পারে এই চিয়া বীজ।

    পরিশেষে বলা যায় যে, আমরা এই চিয়া সিড সম্পর্কে অনেক কিছু জানলাম। আর এই চিয়া বীজের মাত্রাতিরিক্ত পুষ্টিগুণ আছে বিধায়, আমাদের অতিরিক্ত পরিমাণে সেবন করা উচিত নয়। তাতে করে সমস্যা আরো জটিল হতে পারে। তাই আমাদেরকে পরিমাণ মতো এই চিয়া বীজ ভোজন করতে হবে। যাতে করে মানব শরীরের জন্য উপকারী ভূমিকা হিসাবে কাজ করতে পারে এই চিয়া বীজ। তাই বাংলাদেশের কৃষকরা যদি আরো বেশি বেশি করে এই চিয়া চাষের প্রতি উদ্বুদ্ধ হয় তাহলে অন্যান্য দেশের মতো আমাদের দেশও অনেক সফলকাম হবে।

 

 ধন্যবাদান্তে

মোচ্ছাঃ সেতু সরকার

কৃষি পরামর্শ Group

 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url