কলা চাষে সাফল্যের কিছু উপায়
কলা চাষে সাফল্যের কিছু উপায়।
১) প্রথমেই জমির পরজীবি নেমাটোড মারার জন্য আমার নেমাটোড নিয়ে লেখা পোস্টের সবচেয়ে ভালো উপায় অনুসরণ করুন।
২) অন্যের জমি থেকে যেন জল জমিতে না ঢোকে। নিজের জমিতেও যেন জল না জমে অর্থাৎ জল নিকাশির ভালো ব্যবস্থা রাখতে হবে।
৩) অন্য জমিতে ব্যবহৃত কৃষি যন্ত্রপাতি কলার জমিতে ব্যবহার করবেন না অর্থাৎ কলার জমির দা, কাস্তে, কোদাল অন্য জমিতে ব্যবহার করা চলবে না।
৪) কলার চারা অবশ্যই নামীদামী কোম্পানির কাছথেকে কিনবেন। ভুলেও অন্যের জমি থেকে বা সস্তার চারা কিনবেন না। আসল কথা হচ্ছে জীবাণুমুক্ত চারা জোগাড় করতে হবে।
৫) রোগাক্রান্ত না হলে কলা ছাড়া কোনও কিছুই জমির বাইরে যাবে না। মালচিং হিসাবে ব্যবহার করুন।
৬) কলা গাছের দূরত্ব তাপমাত্রা ও আর্দ্রতার উপর নির্ভরশীল। আমার নুয়াপাড়া জেলায় আবহাওয়া বর্ষাকাল ছাড়া সবসময় শুষ্ক হওয়ায় দূরত্ব ৫ ফিট। বাঁকুড়ার ক্ষেত্রে এটা ৫.৫-৬ ফিট এবং গাঙ্গেয় বদ্বীপ অঞ্চলের জন্য ৮.৫-৯ ফিট হওয়া উচিত। বেশি আর্দ্র আবহাওয়ায় ছত্রাকের আক্রমণ কম করার জন্য দূরত্ব বেশি রাখা উচিত। বাঁকুড়ার ক্ষেত্রে জমিতে নূন্যতম আর্দ্রতা বজায় রাখা ও তাপমাত্রা কম করে মাইক্রো ক্লাইমেট তৈরির জন্য ৫.৫ ফিট।
৭) কলা চাষের একটা বড়ো খরচ হচ্ছে চারা মারা। চারা যতো ছোট থাকতে মারবেন ততো ভালো কারন চারাকে বড়ো গাছ খাবার সাপ্লাই করে। চারা মারার জন্য বিশেষভাবে তৈরি টুলস ব্যবহার করা খুব কার্যকরী এবং খরচ খুব কম করে দেয়।
৮) কলা গাছের একটাই মাত্র চারা রাখতে হয় এবং সেটা কলায় ফল আসার সময়। কলা গাছ যেদিকে হেলে আছে তার বিপরীত দিকের চারা রাখা সবচেয়ে ভালো।
চারার পাতা অবশ্যই তরবারির মতো সূচালো হতে হবে, গোল নয় --- যে চারার পাতা সূচালো সে বড়ো গাছ থেকে বেশি খাবার পাচ্ছে।
৯) কলার মোচা কাটা একটা বড়ো ব্যাপার। একদম নিচের যে দুই ছড়া কলা হতে পারতো সেটা সমেত যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব কাটবেন। তাহলে বাদবাকি কলার ওজন বেশি হবে অর্থাৎ কলা বড়ো হবে।
১০) কলা কাটার পরে গাছকে নিচ থেকে কেটে ফেলবেন না। পুরো খাড়া রেখে দেবেন এবং একদম উপরের দিক থেকে পাতা সমেত কাটবেন। গাছ এইভাবে রাখলে অন্য গাছটাকে প্রায় ৬০% নিউট্রিয়েন্ট সাপ্লাই করে।
১১) কলা গাছ একা থাকা পছন্দ করে না। তাই শুধুমাত্র জমির আল বা মাত্র একটা লাইন বরাবর লাগাবেন না। আয়তকার পদ্ধতি অর্থাৎ একের পর এক লাইন সিস্টেম ব্যবহার করুন।
ধন্যবাদ সবাইকে