ওয়েস্ট ডিকম্পোজার কি।

  

ওয়েস্ট ডিকম্পোজার কি।

প্রথমে ওয়েস্ট ডিকম্পোজারের উপাদান  সমন্ধে জানা উচিত।  যেকোনও  প্রাণীর মতোই তৃনভোজী প্রাণীর পাচনতন্ত্রে অসংখ্য প্রকারের উপকারী অনুজীব রয়েছে এবং বিভিন্নরকম অনুজীবের কার্যকলাপ আলাদা।  এইসব অনুজীব  মলের সাথে শরীরের বাইরে আসে। গরুর মল অর্থাৎ  গোবরের থেকে দুই চারটে প্রজাতিকে আলাদা করা হয়েছে যারা সেলুলোজকে দ্রুত ভেঙে দেয়।  বর্তমানে এর সাথে মাটির অজৈব যৌগ থেকে ফসফেট মুক্তকারী ব্যাকটেরিয়াও যুক্ত করা হয়েছে।  এইসব অনুজীবকে আমরা অতি সহজেই উপযুক্ত মাধ্যমে রেখে প্রভুত পরিমাণে বংশবৃদ্ধি করাতে এবং সেটাকে কাজে লাগাতে পারি।  

তাহলে এই ওয়েস্ট ডিকম্পোজার ব্যবহার করে আমরা খড়, পাতা ইত্যাদি সেলুলোজ জাতীয় পদার্থকে দ্রুত সারে পরিনত করতে পারি এবং মাটিতে স্প্রে করে মাটি থেকে দ্রুত অজৈব ফসফেটকে জৈব ফসফেটে পরিনত করতে পারি।   

এইটুকু পড়ে সবাই হয়তো খুব উৎসাহিত হয়ে পড়েছেন কিন্তু যেকোনও কিছুর উপকারের সাথে অপকারও বিচার করার আছে।  বিভিন্ন কৃষি গ্রুপে অসংখ্য নির্বোধ ওয়েস্ট ডিকম্পোজারের ঢালাও প্রচার করছে এবং এটাকেই চমৎকারী জীবাণু সার হিসাবে চিহ্নিত করছে।  

যদি জমিতে ওয়েস্ট ডিকম্পোজার জমিতে স্প্রে করি তাহলে কি হবে?  এর ফলে  শুধুমাত্র দুই চার প্রজাতির অনুজীবের সংখ্যা খুবই বৃদ্ধি পাবে এবং তাদের সংখ্যাবৃদ্ধির জন্য অসংখ্য প্রকারের উপকারী অনুজীবের সংখ্যা  কমে যাবে।  এরা খড়কুটোকে সারে পরিনত করে সাময়িকভাবে গাছের উপকার করবে কিন্তু অনান্য অনুজীবকে মেরে অনেক বেশি ক্ষতি করবে।  যদি জমিতে নাইট্রোজেন সঞ্চয়কারী বা জিব্বারেলিক অ্যাসিড তৈরি করা বা নেমাটোড ধ্বংসকারী  প্রভৃতি অনুজীব খুব কমে যায় তাহলে কি হবে?  নিশ্চয়ই খুব খারাপ ছাড়া ভালো কিছু হবে না।

গরমের সময় মাটির উপরে খড়কুটো দিলে মাটির তাপমাত্রা কম থাকবে এবং মাটির আর্দ্রতা  বাড়বে এবং ফলস্বরূপ জমিতে বিভিন্ন উপকারী অনুজীবের সংখ্যা বৃদ্ধি অনেক বৃদ্ধি পাবে। উপকারী অনুজীব এইসব খড়কুটো থেকে ধীরেধীরে গাছকে বিভিন্ন নিউট্রিয়েন্ট সাপ্লাই করবে।   এইসব  কারনে  খড়কুটো জমিতে ছড়িয়ে দিয়ে অপেক্ষাকৃত গরমেও চাষবাস ভালো হয়। 

 

বর্ষাকালে এটাই ভূমিক্ষয় রোধ করে মাটির উর্বরতা বজায় রাখবে।  বালি মাটিতে বর্ষাকালে ভূমিক্ষয় বেশি হয়।  যদি বালি মাটিতে বর্ষাকালে ওয়েস্ট ডিকম্পোজার ব্যবহার করা হয় তাহলে জলধারণ ক্ষমতা ও ক্যাটায়ন এক্সচেঞ্জ ক্ষমতা কম হওয়ায়  কিছু নিউট্রিয়েন্ট অপেক্ষাকৃত তাড়াতাড়ি মাটি থেকে জলের মাধ্যমে চলে যাবে।  

তাহলে কি ওয়েস্ট ডিকম্পোজারের উপকারিতা নেই?  অবশ্যই আছে কিন্তু সেটা তখনই যখন এই খড়কুটো আপনার কাছে সমস্যা বা অতিরিক্ত পরিমান রয়েছে।  তখন ওয়েস্ট ডিকম্পোজার ব্যবহার করে একটা জায়গায় খড়কুটোকে সারে পরিনত করুন।  সারে পরিনত হওয়ার পরে এতে সেলুলোজ নগন্য হয়ে  যাওয়ায় খাবারের অভাবে ওয়েস্ট ডিকম্পোজারের অনুজীবের সংখ্যাও নগন্য হয়ে যাবে। তখন এই সার স্বাচ্ছন্দ্যে ব্যবহার করা যাবে। 

এইসব কারনে কোম্পানির প্রচার বা তাদের দ্বারা প্রভাবিত ব্যক্তির কথায় নাচানাচি করবেন না।  ওয়েস্ট ডিকম্পোজার শর্তসাপেক্ষে  শুধুমাত্র ওয়েস্ট ( যদি খড়কুটো সমস্যা হয়ে দাড়ায়) ডিকম্পোজ করতে ব্যবহার করুন এবং জীবামৃত সারের কাজ জীবামৃত সারকে করতে দিন।

সংগ্রহীত পোষ্ট  Group by  কৃষি পরামর্শ

নিচের পোষ্ট গুলি পড়তে ক্লিক করুন             

মিষ্টি কুমড়া চাষে রোগ বলাই ও জাত ।

লাওয়ের ফলন বৃদ্ধি।

ব্রাসেলস স্প্রাউট বা মিনি বাঁধাকপির চাষাবাদ পদ্ধতি|

জৈব বা অরগানিক শাকসবজি।

টমেটো চাষ করার পদ্ধতি মৌসুমে এবং অ মৌসুমে ।

উন্নত পদ্ধতিতে করলার চাষ।

বেগুন চাষের পদ্ধিতি।

মিষ্টি আলু চাষ।

বেগুনের উচ্চ ফলনশীল বিভিন্ন জাত।

ঢেঁড়স চাষ

বছর ধরে সবজি চাষের পদ্ধতি লাভজনক।

শিম চাষে জাব পোকার আক্রম

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url