মাল্টা চাষ ।
ছাদে মাল্টা চাষ পদ্ধিতি।
-----------------------
সকলেই জানেন যে ফল খাই বল পাই'। তারপরেও এটি প্রয়োজনীয় হিসাবে খাওয়া হয় না। কারণ অভাব। তবে রয়েছে প্রচুর সুযোগ একটু গ্রহণযোগ্যতা এবং পরিকল্পনা নিলে।
.পরিবারের ফলের চাহিদা মেটাতে আপনার ছাদ বাগানে রোপন করতে করতে পারেন মাল্টা ।
সহজে চাষ করা যায় মাল্টা । চাষ করার পদ্ধতি মেনে চাষ করলে আপনি পেতে পারেন আপনার নিজের গাছের সুন্দর মাল্টা ফল । সুস্বাদু ও দেখতে আকর্ষণীয় একটি ফল হচ্ছে মাল্টা। দেশের সর্বত্র চাষের উপযোগী, মাল্টা বছরের যে কোন সমায়ে রোপণ করা যায়। বাংলা বৈশাখ থেকে মধ্য ভাদ্র ইংরেছী (মে- আগস্ট) মাস রোপণের উত্তম সময় হয়ে থাকে । আপনার ছাদের কোনায় যদি একটু জায়গা থাকে, তাহলে সেখানে লাগিয়ে দিন একটি বা অনেক গুলি মাল্টা গাছে।
.
জলবায়ু ও মাটি:-
-----------------------
শুষ্ক ও উষ্ণ জলবায়ু মাল্টা চাষের জন্য উপযোগী হয়ে থাকে । বাতাসে অধিক আর্দ্রতা ও বৃষ্টিপ্রবণ এলাকায় মাল্টার খোসা পাতলা হয় এবং ফল নিম্নমানের হয়। শুষ্ক আবহাওয়ায় ফলের মান ও স্বাদ উন্নতমানের মিষ্টি হয়। গাছ বেশি রোদে ভাল হয় এবং ছায়ায় গুণগত মান কমে যায়।বাগাছ জলাবদ্ধতা মোটেই সহ্য করতে পারে না।
সুবিধাজনক জাত:--
-------------------------
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউটের উদ্ভাবিত(“বারি মাল্টা-১”)একটি নিয়মিত ফলদায়ী ও উচ্চ ফলনশীল জাত। গাছ খাটো, ছড়ানো ও ঝোপালো হয়। এর পাকা ফল দেখতে সবুজ ও খেতে সুস্বাদু। ফল গোলাকার ও মাঝারি (১৫০ গ্রাম) আকৃতির। ফলের নীচে পয়সার মতো একটি বৃত্ত থাকে (১ম ছবি দ্রষ্টব্য)।
.
চারা রোপণ:--
------------------
কমপক্ষে ২০’*২০’ আকারের টব বা ড্রাম ব্যবহার করতে হবে।২০”*২০”আকারের একটি টবের মাটি তৈরির জন্য সারের পরিমাণ ।
গোবর বা কম্পোস্ট ১০ কেজি,
ইউরিয়া ১৫০ গ্ৰাম,।
টিএসপি ১০০ গ্ৰাম।
, এমওপি ১০০ গ্ৰাম,।
জিংক সালফেট ১০ গ্ৰাম ।
ও বোরিক এসিড ৫ গ্ৰাম।
উপরুক্ত সারগুলো ও মাটি এক সাথে মিশিয়ে নেয়ার ১০ থেকে ১৫ দিন পরে চারা রোপণ করুন ।
.
গাছের পরিচর্যা:-
---------------------
টবের গাছে প্রতি মাসে অন্তত একবার করে এক চা চামচ পরিমাণ NPK/ মিশ্র সার দিবেন এবং ৫০০ গ্রাম গোবর দুই লিটার পানিতে গুলিয়ে গাছের গোড়া থেকে ৬” দূরে ঢেলে দিন। মনে রাখবেন প্রতি বছর বংলা ফাল্গুন থেকে চৈত্র ইংরেজী (মার্চ) থেকে (মে) মাসে বর্ষার পূর্বে ২ বার ও বর্ষার পরে ভাদ্র থেকে আশ্বিন (সেপ্টেম্বর) মাসে ১ বার মোট তিন কিস্তিতে সার প্রয়োগ করতে হবে ।
.
সার প্রয়োগ:-
------------------------
মাল্টা গাছের বয়স ভেদে গাছ প্রতি সার প্রয়োগের পরিমাণ নিন্মরূপ করা হলো :-
১-২ বছরের জন্য।
গোবর বা কম্পস্ট সার ১০-১২ কেজি। ইউরিয়া সার ২০০-৩০০ গ্রাম। টিএসপি সার ১০০-১৫০ গ্রাম ।এমওপি সার ১০০-১৫০ গ্রাম। জিংক ১০ গ্রাম ও বরিক ৫ গ্রাম।
৩-৪ বছরের জন্য।
গোবর বা কম্পস্ট সার ১২-১৫ কেজি। ইউরিয়া ৩০০-৪৫০ গ্রাম।টিএসপি ১৫০-২০০ গ্রাম।এমওপি ১৫০-২০০ গ্রাম। জিংক ১৫ গ্রাম ও বরিক এসিড ৮ গ্রাম।
৫-৭ বছরের জন্য।
গোবর বা কম্পস্ট সার ১৫-১৮ কেজি। ইউরিয়া ৪৫০-৬০০ গ্রাম।টিএসপি ২০০-৩০০গ্রাম।এমওপি ২০০-২৫০ গ্রাম। জিংক ২০ গ্রাম ও বরিক ১০ গ্রাম।
৮-১০ বছরের জন্য।
গোবর বা কম্পস্ট সার ১৮-২০ কেজি। ইউরিয়া ৬০০-৭০০ গ্রাম।টিএসপি ৩০০-৪৫০গ্রাম। এমওপি ২৫০-৩০০ গ্রাম। জিংক ২৫ গ্রাম ও বরিক ১২গ্রাম।
১০ বা তার বেশি বছরের জন্য।
গোবর বা কম্পস্ট সার ২০-২৫ কেজি। ইউরিয়া সার ৭৫০ গ্রাম। টিএসপি সার ৫০০গ্রাম।এমওপি সার ৪৫০ গ্রাম। জিংক ৩০ গ্রাম ও বরিক এসিড ১৫ গ্রাম।
.
ডাল ছাঁটাইকরণ;-
--------------------------
মাল্টা গাছের জন্য ডালা ছাঁটাই অপরিহার্য। গাছের পার্শ্ববর্তী ডালগুলোতে সূর্যের আলো বেশি প্রয়োজন হয়।তাই, ফল ধরার পূর্ব পর্যন্ত ধীরে ধীরে গাছটিকে ছেঁটে নির্দিষ্ট আকারে আনতে হবে। একসাথে এক গাছে প্রচুর ফল আসলে,ফল থাকায় ফল বড় হয় না এবং আকৃতি ভাল হয় না ।এটা হলে যা করণীয় অতিরিক্ত ফলের গুচ্ছে দুটি করে সুস্থ সবল ফল রেখে বাকিগুলো ছেঁটে দিতে হবে।
সৌজন্যে---------------------
নিচের পোষ্ট গুলি পড়তে ক্লিক করুন
অ্যালোভেরা বা ঘৃতকুমারী গাছের অবিশ্বাস্য যত গুণ!
সজনের ডাঁটাতে ও শাকে অবিশ্বাস্য সুবিধা
ভালো৷ পোস্ট