শিম চাষ পদ্ধতি ।
ছাদে বা টবে শিম চাষ পদ্ধতি ।
শিম আমাদের কাছে শীতকালীন সবজি হিসেবেই পরিচিত। কিন্তু বর্তমানে সারা বছরই ব্যাপকহারে শিমের চাষ করা হচ্ছে। আপনি বাড়ির চিলেকোঠা বা ছাদে অথবা ঘরের বারান্দায় , বাড়ির আঙ্গিনায় , উঠোনে শিমের চাষ করতে পারেন খুব সহজে।তাহলে আসুন জেনে নেই- কিভাবে টবে শিম চাষ করবেন।
.
টব বাছাই:-
----------------------
টবে চাষ করার ক্ষেত্রে আপনি মাঝারি বা বড় সাইজের মাটির টব ,ড্রাম,বালতি ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়াও আপনি ইচ্ছা করলে হাফ সাইজের অথবা কাটা ড্রাম ব্যবহার করতে পারেন। গামলা বা ক্যারেটে চাষ করলেও করতে পারেন । ৫ লিটার তেলের পাত্রেও শিম চাষ করে সাফল্য পেতে পারেন ।
.
মাটি প্রস্তুত:--
----------------
আমাদের দেশে এঁটেল মাটি ছাড়া, প্রায় সব ধরণের মাটিতে শিমের চাষ করার জন্য উপযোগী হয় , তবে দো-আঁশ ও বেলে দো-আঁশ মাটিতে শিমের চাষ ভাল হয়ে থাকে । টবের অর্ধেক পরিমাণ , ১৫০ থেকে ২০০ গ্রাম পঁচা গোবর সার , ১০০ থেকে ১৫০ টিএসপি সার গ্রাম এমওপি সার ভালোভাবে মিশিয়ে টব ভরাট করতে হবে। এভাবে ৮-১০ দিন রেখে দিতে হবে এবং টবে মাঝে মাঝে পানি দিতে হবে।
.
জাত নির্বাচন:-
-------------------
শিমের বিভিন্ন জাতের মধ্যে ঘৃতকাঞ্চন, নলডক, আশ্বিনা, কার্তিকা, হাতিকান, বৌকানী, রূপবান, প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিটিউট উদ্ভাবিত দেশী শিমের জাত বারি শিম-১ ও বারি শিম-২ চাষের জন্য বেশ ভালো। এ ছাড়া সাদা ইপসা-১ বারমাসী (বারমাসী )বেগুনি ইপসা-২ জাত দুটিও প্রায় সারা বছর চাষ করা যায়।
.
বীজ বপন:-
-----------------------
বীজ বপনের আগে ২২থেকে ২৪ ঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে নিলে তাড়াতাড়ি চারা গজায়। টবের মাটি প্রস্তুতের ৮-১০ দিন পর প্রতি টবে দুই-তিনটি বীজ ফাঁকা ফাঁকা করে ২.৫-৩.০ সেমি গভীরে বপন করতে হবে। চারা গজানোর ১০ থেকে ১২ দিন পর প্রতি মাদা থেকে বা টব থেকে ২টি সুস্থ ও সবল চারা রেখে বাকিগুলো উঠিয়ে ফেলতে হবে। চারা গজানোর পর প্রথম দিকে নিয়মিত পানি দিতে হবে। পরবর্তীতে অতিরিক্ত গরম পড়লে বেশি পানি দিতে হবে।
.
পরবর্তী পরিচর্যা:-
-----------------
মাঝে মাঝে নিড়ানি বা খুচানে দিয়ে চারার গোঁড়ার মাটি খুঁচিয়ে আলগা ও ঝুরঝুরে করে নিতে হবে হবে। বৃষ্টির অভাবে মাটিতে রসের ঘাটতি হলে পানি সেচ দিতে হবে। ছোট সোজা লাঠি দিয়ে গাছকে বেধে দিতে হবে চারা একটু বড় হলে । যত্নসহকারে তৈরি করে দিতে হবে মাচা । শিম গাছ ছেটে দিলো গাছ ঝোপালো হয় ফুল ফল বেশি হয়।
.
উপরি সার প্রয়োগ:-
---------------------
মনে রাখবেন যে সার প্রয়োগ দুই কিস্তিতে হবে। প্রথম কিস্তি চারা গজানোর এক মাস পর এবং দ্বিতীয় কিস্তি গাছে দুই-চারটি ফুল ধরার সময়। প্রতি কিস্তিতে মাদা প্রতি ইউরিয়া + এমওপি সার ২৫+২৫ গ্রাম ।মোট ৫0 গ্রাম গাছের গোড়ার চারদিকে (গোড়া থেকে ১০-১৫ সেমি দূরে) উপরি প্রয়োগ করে মাটির সাথে ভালো ভাবে মিশিয়ে দিতে হবে। সার প্রয়োগের সময়, দেখে নিবেন , মাটিতে রসের অভাব হলে ঝাঁঝরি দিয়ে পানি সেচ দিতে হবে।
.
ফসলকালীন যত্ন:-
---------------------
গাছের যত্ন করতে হবে নিয়মিত যেমন আগাছা পরিষ্কার করে দিতে হবে, মাঝে মাঝে অতিরিক্ত আগা ও লতাপাতা ছাঁটাই করে দিতে হবে। ফুল আসলে গোঁড়ায় বেশি পরিমাণে মাটি দিতে হবে। ফুলে পর্যাপ্ত পতঙ্গ না আসলে কৃত্রিম পরাগায়ন করতে হবে। পুরুষ ফুলের পরাগধানী হতে পরাগরেণু সংগ্রহ করে স্ত্রী ফুলের গর্ভমুণ্ডে স্থানান্তর করতে হবে।
আপনাকে শেয়ার করার অনুরোধ রইল।
নিচের পোষ্ট গুলি পড়তে ক্লিক করুন
.