ধানের বাদামী ফড়িংর এর লক্ষণ ওব্যবস্থাপনা ।

 ধানের বাদামী ফড়িংর এর লক্ষণ ওব্যবস্থাপনা ।


লক্ষণ-:
কারেন্ট পোকা নামেও এটি পরিচিত । ধানের অতি ক্ষতিকর পোকা এটি।এরা খুব তাড়াতাড়ি বংশ বৃদ্ধি করে পারে, ফলে এ পোকার সংখ্যা খুব তাড়াতাড়ি বেড়ে যায় যে, আক্রান্ত ক্ষেতে বাজ পড়ার মত বর্ণ ধারণ করে । আক্রান্ত গাছগুলো প্রথমে হলুদ রংএর হয় এবং পরে শুকিয়ে মারা যেতে থাকে। পূর্ণবয়স্ক বাদামী পাখাবিশিষ্ট ফড়িংগুলো ধান ক্ষেতে আক্রমণ করে থাকে । এরা পাতার খোলে এবং পাতার মধ্য শিরায় ডিম প্রচর পরিমানে ডিম পাডে । ডিম থেকে বাচ্চা বের হতে ৭-৯ দিন সময় লাগে থাকে । ৫ বার খোলস বদলায় বাচ্চাগুলো এবং পূর্ণবয়স্ক ফড়িং হতে ১৩-১৫ দিন সময় নেয় থাকে । প্রথম পর্যায়ের বাচ্চাগুলোর রং সাদা হয় এবং পরের বাচ্চাগুলো বাদামী হয় । ধানে শীষ লাগার সময় ছোট পাখা বিশিষ্ট ফড়িং এর সংখ্যাই বেশী থাকে এবং স্ত্রী পোকাগুলো গাছের গোড়ার দিকে অবস্থান করে । গাছের বয়স বাড়ার সাথে সাথে লম্বা পাখা বিশিষ্ট ফড়িং এর সংখ্যাও সাথে সাথে বাড়তে থাকে,। যারা এক জায়গা থেকে আর এক জায়গায় উড়ে যেতে পারে খুব সহজে ।
ব্যবস্থাপনা:
১. আক্রান্ত জমিতে পিলি কেটে আলো চলাচলের ব্যবস্থা করতে হবে ।
২. জমিতে জমে থাকা পানি সরিয়ে ফেলার ব্যবস্থা করতে হবে ।
৩. উর্বর জমিতে ইউরিয়া সারের উপরি প্রয়োগ পরিহার করতে হবে ।
৪. বাদামী গাছফড়িং প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন জাত চাষ করতে হবে।। যেমন: ব্রি ধান-৩৫ চাষ করা।
৫. ক্ষেতে শতকরা ৫০ ভাগ গাছে অন্তত- একটি মাকড়সা থাকলে কীটনাশক প্রয়োগ না করা ভালো হবে ।
৬. ৫০%( ভাগ )ধান গাছে ২-৪ টি ডিমওয়ালা স্ত্রী পোকা থাকলে অথবা ১০টি বাচ্চা পোকা প্রতি গোছায় থাকলে কীটনাশক ব্যবহার করা। আইসোপ্রোকার্ব গ্রুপের কীটনাশক।

যেমন:-মিপসিন বা সপসিন ২.৬ গ্রাম / লি. হারে পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করুন ।
অথবা ইমিডাক্লোপ্রিড গ্রুপের কীটনাশক যেমন:- ইমিটাফ ১২৫ মিলি/ হেক্টর (০.২৫ মিলি/ লি) হারে স্প্রে করুন। ইমপেল (০.৫ মিলি/ লি) হারে অথবা ক্লোরপাইরিফস গ্রুপের কীটনাশক--- ক্লাসিক ২ মিলি/ লি. হারে পানিতে মিশিয়ে গাছের গোড়ায়স্প্রে করুন।
৭. .যে সব এলাকায় জমেতে সব সময় বাদামী গাছফড়িং এর উপদ্রব বেশি হয় সে সব এলাকায় তাড়াতাড়ি পাকে এমন জাতের ধান চাষ করুন ( যেমন: বিনা ধান-৭ বা ব্রি ধান৩৩ )।
৮ ..চারা থেকে চারা দূরত্ব ৩০ সে.মি ও লাইন থেকে লাইনে দূরত্ব ৪০ সেন্টিমিটার লাগানো ভালো হবে ।
৯. জমিতে সুষম পরিমানে ,টিএসপি ইউরিয়া, এবং পটাশ সার ব্যবহার করুন । সাথে এনপিকে গুটি প্রয়োগ করুন ।

১০. চারা রোপন করতে বিলম্বে করবেন না।
১১.ফসল কাটার পর আক্রান্ত জমি ও তার আসে-পাশের জমির নাড়া পুড়িয়ে দিতে হব ।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url