গাজর চাষ পদ্ধতি।
গাজর চাষ পদ্ধতি।
গাজর শীতের সমায়ে সবজিগুলির মধ্যে একটি। এই ফসলটি সারা বছর হয়। তবে শীতকালে বেশি ফলন দেয়। অন্যান্য সময়ে এর ফলনও কম হয়। যে কারণে শীতকালীন শাকসব্জির ভেতর গাজর জনপ্রিয়। ইংরেজি নাম ক্যারোট এবং বৈজ্ঞানিক নাম ডাকাস ক্যারোটা। আমাদের দেশের প্রায় সর্বত্র গাজরের চাষ হয়। তবে যশোর, মানিকগঞ্জ, নরসিংদী, পাবনা ও অন্যান্য জেলায় গাজরের উৎপাদন বেশি।
ভিটামিন: গাজর ক্যারোটিন, ভিটামিন এ, থায়ামিন এবং রাইবোফ্লাভিনে প্রচুর পরিমাণে সমৃদ্ধ। এর সবুজ পাতা পুষ্টিকর, প্রোটিন, ভিটামিন এবং খনিজ সমৃদ্ধ। এক ধরণের মিষ্টি পানীয় তৈরি করতে কালো গাজর ব্যবহার করা হয়।
বিভিন্ন ধরণের: গ্রীষ্ম এবং শীতকালীন দুটি অংশে বিভক্ত হতে পারে গাজর। কালো, লাল, বেগুনি এবং হলুদে ।
গ্রীষ্মকালীন জাতগুলি: পুসা কেশর, পুসা মেঘালী এবং কমলা জিনো।
চাষের সময়: আগস্ট থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সমভূমিতে এবং মার্চ থেকে জুলাই পর্যন্ত পাহাড়ি অঞ্চলে বপন করা হয়। গাজরের বীজ থেকে আঙ্গুর বের হতে ৪-১০ দিন সময় লাগে।
জমির প্রস্তুতি -.
১। গাজরের শিকড় মাটির গভীরে প্রবেশ করে; সুতরাং জমিটি ৮থেকে ১0 ইঞ্চি গভীরে চাষ করা উচিত।
2. জমি ৪ থেকে ৫ টি চাষা দিতে হবে এবং মই দিয়ে ভালভাবে ঝুরঝুরে করে প্রস্তুত করা উচিত।
৩. বড়ো মাটির দলা ভেঙে মাটি সমান করতে হবে।
৪. মাটিতে সারিগুলি ৮-১০ ইঞ্চি তৈরি করতে হবে।
সার প্রয়োগ কৃষকদের মতে, ভাল মানের ফলন পেতে গাজর চাষের জমিতে যতটা সম্ভব জৈব সার প্রয়োগ করা প্রয়োজন। মাটি পরীক্ষা করতে হবে এবং মাটির প্রকার অনুযায়ী সার প্রয়োগ করতে হবে। তবে জৈব সার ব্যবহার করা গেলে মাটির ও পরিবেশের গুণগতমান উভয়ই ভাল হবে। বাড়িতে যদি গবাদি পশু থাকে তবে সেখান থেকে গোবর সংগ্রহ করা যায়। যদি আপনার নিজস্ব গবাদি পশু না থাকে তবে প্রতিবেশী যারা গরু রাখেন তাদের কাছ থেকে গোবর সংগ্রহ করা যায়। এছাড়াও, আপনি যদি ভাল ফলন পেতে চান তবে আপনি জমিতে কম্পোস্ট ব্যবহার করতে পারেন। বাড়ির চারপাশে গর্ত খুঁড়ে এবং সেখানে আবর্জনা, পড়ে যাওয়া পাতা ইত্যাদি সজ্জিত করে কম্পোস্ট তৈরি করা সম্ভব।
বীজের হার: প্রতি একরে চাষের জন্য বীজের প্রয়োজন ১.৫ থেকে ২ কেজি । প্রথম ফসল বপনের ৮০-৯০ দিন পরে ফসল উঠে যাই । ২০ × ১০ সেমি দূরত্বে গাছ লাগানো থাকবে।
উপস্থিতি: 1. ঘন চারা বা আগাছা নিড়ানি দ্বারা পাতলা করা উচিত। আর্দ্র মাটি গাজর চাষের জন্য ক্ষতিকারক। তাই জলের চাহিদা বুঝে জমিটি সেচ দেওয়া দরকার।
২. জমিতে আগাছা থাকলে পোকামাকড়, রোগের জীবাণু এবং ইঁদুরের আক্রমণ বেশি হয়। সুতরাং জমিতে আগাছা জন্মে তবে তা অপসারণ করা উচিত।
রোগের পোকামাকড় গাজরের হলুদ ভাইরাসজনিত রোগ: গাজরে কীটপতঙ্গ এবং পোকামাকড় খুব বেশি দেখা যায় না। তবে পাতলা ফড়িং পোকামাকড়ের মাধ্যমে প্রায়শই গাজরে হলুদ ভাইরাসের রোগ দেখা যায়। এর আক্রমণে গাজরের ছোট বা কচি পাতা হলুদ এবং কার্ল হয়ে যায়। পাতা হলুদ হয়ে যায় এবং বিবর্ণ হয়ে যায়।
জবপোকা: এই পোকা গাজরের পাতা এবং গাছের কচি অংশের রস চুষে ফেলে এবং ফসলের অনেক ক্ষতি করে।
সংক্রামক রোগ: পাতা, শিকড় এবং গোড়ায় ব্যাকটিরিয়া সংক্রমণ দেখা যায়। অতিরিক্ত মাত্রায় নাইট্রোজেন সার ব্যবহার কারা যাবে না।
স্থানীয়ভাবে উত্পাদিত জৈব কীটনাশক প্রতিকারগুলি ব্যবহার করা যেতে পারে। পোকামাকড় নিয়ন্ত্রণ না করা হলে স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের ইউনিয়ন পর্যায়ের কৃষি অফিসার বা উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শের জন্য যোগাযোগ করা যেতে পারে।
ফসল কাটা গাজর বপনের ৩ মাসের মধ্যে সংগ্রহের জন্য উপযুক্ত। তবে, আপনি যদি ভাল ফলন পেতে চান তবে আপনার 100 দিনের আগে ফলস বাছাই করা উচিত নয়। পুষ্টিকর এবং ভাল মানের গাজর পেতে আপনাকে বীজ বপনের সময় থেকে ১০০- ১২৫ দিনের মধ্যে ফসল সংগ্রহ করতে হবে।
সৌজন্যে---------------------
নিচের পোষ্ট গুলি পড়তে ক্লিক করুন
মিষ্টি কুমড়ার গাছের পাতা হলুদ হয়ে যাচ্ছে।
লাও এবং মিষ্টি কমড়ার ও পচা রোগ.
শিমের ফুল ও ফল ছিদ্রকারী পোকা দূর।
কি ভাবে লাউয়ের বাম্পার ফলন হবে।
টমেটোর পচা রোগ ( Blossom End Rot )।
নতুন জাতের শীতকালীন ব্ল্যাক টমেটো.।
শাকসবজি চাষ হতে পারে চালিকাশক্তি.।